পিডিএফ লিঙ্ক / PDF Link: Satyajit Ray-Professor Shanku-Manrow Dwiper Rahasya
প্রফেসর শঙ্কুর গল্প – মানরো দ্বীপের রহস্য – সত্যজিৎ রায়
আবার শঙ্কু, আর এর আগে তুলে দেওয়া গল্পটির বর্ণনার মত এবারো গল্প থেকে উদ্ধৃতি দিয়েই শুরু করছি –
এই দ্বীপে পৌছানোর আগে গত তিন সপ্তাহের ঘটনা সবই আমার ডায়রিতে বিক্ষিপ্তভাবে লেখা আছে। হাতে যখন সময় পেয়েছি তখন সেগুলোকেই একটু গুছিয়ে লিখে রাখছি।
আমি যে আবার এক অভিযানের দলে ভিড়ে পড়েছি, সেটা বোধহয় আর বলার দরকার নেই। এই দ্বীপের হয়তো একটা নাম থাকতে পারে, কারণ আজ থেকে তিনশো বছর আগে এখানে মানুষের পা পড়েছিল, কিন্তু সে নাম সভ্য জগতে পৌঁছায়নি। আমরা এটাকে আপাতত মানরো দ্বীপ বলেই বলছি।
আমরা দলে আছি সবশুদ্ধ পাঁচজন। তার মধ্যে একজন হল আমার পুরনো বন্ধু জেরেমি সন্ডার্স, যার উদ্যোগেই এই অভিযান। এই উদ্যোগের গোঁড়ার কথা বলতে গেলে বিল ক্যালেনবাখের পরিচয় দিতে হয়। ইনিও আমাদের দলেরই একজন। ক্যালিফোর্নিয়ার অধিবাসী, দীর্ঘকায় বেপরোয়া শক্তিমান পুরুষ, পেশা ছবি তোলা। বয়স পয়তাল্লিশ হতে চলল, কিন্তু চালচলন তার অর্ধেক বয়সের যুবার মতো। ক্যালেনবাখের সঙ্গে সন্ডার্সের পরিচয় বেশ কয়েক বছরের। গত ডিসেম্বরে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক পত্রিকার তরফ থেকে ক্যালেনবাখ গিয়েছিল উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার কয়েকটি শহরে কিছু স্থানীয় উৎসবের ছবি তুলতে। মোরক্কোর আগাদির শহরে এসে এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটে। আগাদির সমুদ্রতীরের শহর, সেখানে অনেক জেলের বাস। ক্যালেনবাখ জেলেপাড়ায় গিয়েছিল সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ করে তাদের ছবি তুলতে। একটি জেলের বাড়িতে ঢুকে তার চোখ পড়ে মালিকের বছরতিনেকের একটি ছেলের উপর। ছেলেটি হাতে একটা ছিঁপিআটা বোতল নিয়ে খেলা করছে। বোতলের ভিতরে কাগজ দেখতে পেয়ে ক্যালেরবাখের কৌতুহল হয়। সে ছেলেটির হাত থেকে বোতল নিয়ে দেখে তার ছিপি সিল করে বন্ধ করা এবং ভিতরের কাগজটা হল ইংরেজীতে লেখা একটা চিঠি। হাতের লেখার ধাঁচ থেকে মনে হয় সে চিঠি বহুকালের পুরনো। ছেলেটির বাপকে জিজ্ঞেস করে ক্যালেনবাখ জানে যে ওই বোতল নাকি তার ঠাকুরদাদার আমল থেকে তাদের বাড়িতে আছে। জেলেরা জাতে মুসলমান, আরবি ভাষায় কথা বলে, তাই বোতল থেকে চিঠি বের করে পড়ার কোন প্রশ্ন ওঠেনি।
সেই চিঠি ক্যালেনবাখ বোতল থেকে বার করে পড়ে এবং পড়ার অল্পদিনের মধ্যেই তার কাজ সেরে চলে যায় লন্ডনে। সেখানে সন্ডার্সের সঙ্গে দেখা করে চিঠিটা তাকে দেখায়। পেনসিলে লেখা মাত্র কয়েক লাইনের চিঠি। সেটার বাংলা করলে এই দাঁড়ায় –
ল্যাটিচিউড ৩৩ ডিগ্রি ইস্ট – লঙ্গিচিউড ৩৩ ডিগ্রি নর্থ,
১৩ ডিসেম্বর ১৬২২
এই অজানা দ্বীপে আমরা এমন এক আশ্চর্য উদ্ভিদের সন্ধান পেয়েছি যার অমৃততুল্য গুণ মানুষের জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। এই সংবাদ প্রচারের জন্য ব্র্যান্ডনের নিষেধ সত্ত্বেও এ চিঠি আমি বোতলে ভরে সমুদ্রের জলে ভাসিয়ে দিচ্ছি। ব্ল্যাকহোল ব্র্যান্ডন এখন এই দ্বীপের অধীশ্বর। অতএব এই চিঠি পড়ে কোনও দল যদি এই উদ্ভিদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে এখানে আসে, তারা যেন ব্র্যান্ডনের সাথে মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হয়ে আসে। আমি নিজে ব্র্যান্ডনের হাতের শিকার হতে চলেছি।
হেক্টর মানরো
Professor Shanku’s Adventures – Manrow Dwiper Rahasya (The Manrow Island Mystery) – Satyajit Ray
Professor Shanku again. This time, Shanku finds himself in an expedition to an island in which presumably no one had set foot for the last three centuries. The reason – a message in a bottle from a certain Dr. Hector Manrow, who was traveling in a ship that had been looted by Caribbean pirates in 1622. Apparently, the pirates and Manrow became stranded soon after that in an island. But what was interesting to the explorers was Manrow’s disclosure that the island had a certain fruit whose near-ambrosia like benefits could change human civilization forever.